আবু দাউদ (পার্ট-১ ) ১-১৩ হাদিস

   [] সহিহ আবু দাউদ শরীফ

এর থেকে হাদিস সমূহ সংগৃহীত []


১। আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা-- হযরত মুগীরা ইবন শােবা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম যখন পায়খানায় গমন করতেন, তখন বহুদূর যেতেন - (তিরমিযী, নাসাঈ,ইবন মাজা)।




- ২। মুসাদ্দাদ ইবন মুসারহাদ- হযরত জাবের ইবন আবদুল্লাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম যখন পায়খানার ইরাদা করতেন, তখন তিনি এতদূরে গমন করতেন যে, তাঁকে কেউ দেখতে পেত না। (ইবন মাজা)।


৩। মূসা ইবন ইসমাঈল- আবু তাইয়াহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন শায়েখ আমার  নিকট বর্ণনা করেছেন- হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) যখন বসরায় গমন করেন, তখন তাঁর নিকট আবু মূসা (রা)-র সূত্রে কয়েকটি হাদীছ বর্ণনা করা হয়। হযরত আবদুল্লাহ্ (রা) আবু মূসা (রা)-র নিকট কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে একখানা পত্র লেখেন। জবাবে হযরত আবু মূসা (রা) লেখেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। তখন তিনি পেশাব করবার ইরাদা করেন। অতঃপর তিনি একটি প্রাচীরের পাদদেশের নরম ঢালু জায়গায় গমন করে পেশাব করলেন। পরে তিনি (স) বলেনঃ তােমাদের কেউ যখন পেশাব করবার ইরাদা করে, তখন পেশাবের জন্য সে যেন নীচু নরম স্থান নিরূপণ করে। (কারণ। নরম মাটিতে বা উঁচু থেকে নীচুতে ঢালু জায়গায় পেশাব করলে তা শরীরে লাগার সম্ভাবনা। থাকে না। অনুরূপ ভাবে পেশাবখানা নির্মাণ করতে হয়)।


৪। মুসাদ্দাদ ইবন মুসারহাদ- হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম পায়খানায় প্রবেশ করতেন, হাম্মাদের বর্ণনানুযায়ী তখন তিনি (স) বলতেনঃ “ইয়া আল্লাহ! আমি তােমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি এবং আবদুল ওয়ারেছের বর্ণনামতে তিনি (স) বলতেনঃ আমি আল্লাহর নিকট খবীছ স্ত্রী ও পুরুষ শয়তান হতে আশ্রয় প্রার্থনা করি”-(বুখারী, মুসলিম, ইবন মাজা, তিরমিযী, নাসাঈ)।

৫| আল-হাসান ইবন আমর উক্ত হাদীছ সম্পর্কে হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত আছে। | যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ্! আমি তােমার নিকট
আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হযরত শােবা হতে বর্ণিতঃ কোন কোন সময় রাসূলুল্লাহ্ (স) আউযু । | বিল্লাহ’ বলতেন এবং আবদুল আযীয হতে উহায়ব বর্ণনা করেছেন যে, (পায়খানায় প্রবেশের। পূর্বে) আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত বলে নির্দেশ দিয়েছেন -(ঐ)।



৬। আমর ইবন মারযুক"- হযরত যায়েদ ইবন আরকাম (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয় এই সকল পায়খানার স্থানে সাধারণ শয়তান উপস্থিত হয়ে থাকে। অতএব তােমাদের কেউ যখন পায়খানায় যাওয়ার ইরাদা করে তখন সে যেন বলেঃ "আমি আল্লাহর নিকট স্ত্রী ও পুরুষ উভয় শয়তানের খারাবী হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি”-(ইবন মাজা)।


 ৭। মুসাদ্দাদ ইবন মুসারহাদ হযরত সালমান (রা) হতে বর্ণিত। রাবী (বর্ণনাকারী) বলেনঃ তাঁকে এরূপ বলা হয়েছে যে, নিশ্চয় তােমাদের নবী (স) তােমাদেরকে সব কিছুই শিক্ষা দিয়ে থাকেন, এমনকি পায়খানার রীতিনীতি সম্পর্কেও। তদুত্তরে তিনি বলেনঃ হাঁ, নিশ্চয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে কিলামুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করতে নিষেধ। করেছেন। তিনি (স) আরাে বলেছেনঃ আমরা যেন ডান হাত দিয়ে ইস্তিজা না করি এবং আমাদের কেউ যেন তিনটি প্রস্তরের (ঢিলা-কুলুখের) কমে ইস্তিজা (পবিত্রতা অর্জন) না করে অথবা কেউ যেন গােবর (বা কোন নাপাক বস্তু) বা হাড় দিয়ে ইস্তিজা না করে- (মুসলিম, তিরমিযী, ইবন মাজা, নাসাঈ)।



৮। আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি তােমাদের জন্য পিতৃতুল্য। আমি দীনের বিষয়সমূহ তােমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকি। অতএব তােমাদের কেউ যখন পায়খানায় যাওয়ার ইচ্ছা করেসে যেন কিবলাকে সম্মুখে বা পিছনে রেখে না বসে এবং ডান হাতের দ্বারা যেন পবিত্রতা অর্জন না করে। তা ছাড়া তিনি (স) আমাদেরকে তিনটি প্রস্তরের (টিলার) সাহায্যে (ইস্তিজা) করার নির্দেশ দিতেন এবং সর্ব প্রকার নাপাক বস্তু ও জরাজীর্ণ হাঁড়ের দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে নিষেধ করতেন। (মুসলিম, ইবন মাজা, নাসাঈ)। ১। মহানবী (স) এবং তাঁর দীনের উপর অপবাদ আরােপের প্রয়াসে মদীনার ইহুদীরা হযরত সালমান রাে)-কে উক্তরূপ প্রশ্ন করেছিল। অনুবাদক)।
কিতাবুত তাহারাত

৯।মুসান্দাদ,...হযরত আবু আইউব (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যখন তােমরা পায়খানায় আসবে, তখন তােমরা কিবলামুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করবে না। বরং তােমরা পূর্ব বা পশ্চিমমুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করবে। অতঃপর আমরা যখন শামে (সিরিয়া) উপনীত হই তখন আমরা সেখানকার পেশাব-পায়খানার ঘর ও গােসলখানাসমূহ কিবলামুখী করে তৈরী দেখতে পাই। সে কারণে আমরা উক্ত স্থানে পেশাব-পায়খানা করার সময় একটু মােড় দিয়ে বসতাম এবং আল্লাহর নিকট এজন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতাম- (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবন মাজা,নাসাঈ)।



 ১০। মূসা ইবন ইসমাঈল- হযরত মাকাল ইবন আবী মাকাল আল-আসাদী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উভয় কিবলামুখী হয়ে। পেশাব-পায়খানাকরতে নিষেধকরেছেনং-(ইবন মাজা)।। ১। হযরত আবু আইউব আনসারী (রা) উপরােক্ত হাদীছ মদীনাবাসীদের লক্ষ্য করে বর্ণনা করেন। যেহেতু মদীনাবাসীদের কিবলা হল দক্ষিণ দিকে, সেজন্যে পেশাব-পায়খানার সময় তাদের পূর্ব-পশ্চিমমুখী হয়ে বসতে হবে। অনুরূপভাবে যাদের কিবলা পশ্চিম দিকে তারা উত্তর-দক্ষিণমুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করবে। -(অনুবাদ) ১। উভয় কিবলা বলতে বায়তুল্লাহ ও বায়তুল মুকাদ্দাসকে বুঝানাে হয়েছে। যেহেতু বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের প্রথম অস্থায়ী কিবলা ছিল, তাই এর প্রতিও সম্মান প্রদর্শনার্থে রাসূলুল্লাহ (স) এইরূপ নিষেধাজ্ঞা অরােক্ষরেছেন। (অনুবাদক)। সুনানে আবু দাউদ (রহ)
১১। মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া মারওয়ান আল-আসফার হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি হযরত ইবন উমার (রা)-কে কিবলার দিকে মুখ করে তার উট বসাতে দেখেছি। অতঃপর তিনি উটের দিকে মুখ করে পেশাব করলেন। তখন আমি তাকে বললামঃ হে আবু আবদুর রহমান। কিবলার দিকে মুখ করে পেশাব করার ব্যাপারে নিষেধ করা হয় নি কি? তিনি বলেনঃ হাঁ, তবে এই নিষেধাজ্ঞা খােলা মাঠের ব্যাপারে প্রযােজ্য। অতঃপর যখন তােমার এবং কিবলার মধ্যে আড় স্বরূপ কিছু থাকে, এমতাবস্থায় কোন অন্যায় হবে না।


 ১২। আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা-- হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা) হতে বর্ণিত। তিনি । বলেছেনঃ একদা আমি ঘরের ছাদে উঠে দেখলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম দুইটি কাঁচা ইটের উপর বসে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে পেশাব-পায়খানা করছেন। | -(বুখারী, মুসলিম, ইবন মাজা, নাসাঈ, তিরমিযী)। ২। ইমাম আবু হানীফা (রহ) ও অধিকাংশ ইমামের মতে কিবলার দিকে মুখ করে অথবা কিলা পিছনে রেখে পেশাব-পায়খানাকানাজায়েয। – (অনুবাদক)। ১৩। মুহাম্মাদ ইবন বাশশার- হযরত জাবের ইবন আবদুল্লাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কিবলার দিকে মুখ করে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন। অথচ রাসূলুল্লাহ (স)-এর ইন্তিকালের এক বছর পূর্বে আমি তাঁকে কিবলার দিকে মুখ করে পেশাব করতে দেখেছি - (তিরমিযী, ইবন মাজা)।




No comments

Powered by Blogger.