বাংলা হাদিস

    





[] সহিহ বুখারি- ও মুস্লিম শরিফ
এর থেকে হাদিস সমূহ সংগৃহীত []

৪৬০।[] সহিহ মুস্লিম শরিফ
উকবা ইবনে আমের থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন ঃ আমাদের উপর উট চরানাের দায়িত্ব ছিলাে। একদিন আমার পালা আসলে আমি সন্ধায় উটগুলাে চারণভূমি থেকে নিয়ে এসে দেখলাম রাসূলুল্লাহ (সা) দাঁড়িয়ে লােকদের সামনে ভাষণ দিচ্ছেন। আমি তার বক্তৃতার যে অংশ শুনতে পেলাম তা হলাে : 
কোনাে মুসলমান যখন উত্তমরূপে ওযু করে | একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দিকে রুজু হয়ে দাঁড়িয়ে দু'রাকাত নামায পড়ে তার জন্যে জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। 
উকবা বলেন, একথা শুনে আমি বলে উঠলাম 
এটি কি চমৎকার কথা !! 
ঠিক এই সময়ে সামনের জনৈক ব্যক্তি বলে উঠলাে, এর পূর্বের কথাটিও চমৎকার ছিল। আমি দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখলাম উমর একথা বললেন। তিনি বলছেন, তুমি যে এক্ষণই এসেছো , আমি তা দেখেছি। এর পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সা) যে কথাটি বলেছেন তা হচ্ছে " তােমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি উত্তম ও পূর্ণাংগরূপে ওযু করার পর বলে “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনাে ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ তার বান্দাহ ও রাসূল। তাহলে তার জন্যে বেহেশতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হয়। সে ইচ্ছা করলে এর যে কোনাে দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে। "



 ৪৬২।
[] সহিহ মুস্লিম শরিফ
আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ ইবনে আসিম আল-আনসারী যিনি রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাহচর্য পেয়েছেন, তাঁর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাকে কেউ বললাে ঃ আপনি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সা) মত করে ওযু করে দেখান। সুতরাং তিনি একপাত্র পানি চেয়ে নিলেন এবং তা থেকে পানি ঢেলে দু হাত তিনবার করে ধুলেন, পরে পাত্রের ভেতর হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে এক আঁজলা পানি দ্বারা কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিলেন। এরূপ তিনবার করলেন। পুনরায় তার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন, আবার হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে দু' হাতের কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন, অতঃপর হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে মাথা মাসহু করলেন এবং উভয় হাতকে মাথার সম্মুখ থেকে টেনে পেছন দিকে নিয়ে গেলেন, পরে পা দুখানা টাখনু বা গিরা পর্যন্ত ধুয়ে বললেন ঃ এটা ছিল রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর ওযু।


৪৫৩। [] সহিহ মুস্লিম শরিফ
জামে' ইবনে শাদ্দাদ আবু সাখরা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন : আমি হুমরান ইবনে আবান কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন ঃ আমি উসমান এর জন্যে ওযুর পানির ব্যবস্থা করতাম। এমন একটি দিনও অতিবাহিত হতােনা যেদিন সামান্য পরিমাণ পানি হলেও তা দ্বারা গােসল করতেন না। 'উসমান বলেছেন, একদিন আমরা যখন এই (ওয়াক্তের) নামায শেষ করলাম তখন রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদেরকে বললেন। মিসআ'র বলেন ঃ আমার হনে হয় তা ছিলাে আসরের নামায। তিনি বললেনঃ আমি স্থির করতে পারছিনা যে, তােমাদেরকে একটি বিষয়ে কিছু বর্ণনা করবাে না নীরব থাকব। তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি তা কল্যাণকর হয় তাহলে আমাদেরকে বলুন। আর যদি অন্য রকম কিছু হয়, তাহলে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই অধিক অবগত। এরপরে তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা যেভাবে আদেশ করেছেন যদি কোনাে মুসলমান সেইভাবে পবিত্রতা অর্জন করে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, তাহলে এসব নামাযের মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
_________________________________________________________ * অনেক সাহাবাই হযরত উসমান (রা)-র এই ওযু দেখেছিলেন। কিন্তু কেউই কোন দ্বিমত পােষণ করেননি। সুতরাং এটি ইজমা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।



 ৪৮৬।[] সহিহ মুস্লিম শরিফ
নু’আঈম ইবনে আবদুল্লাহ আল-মুজমির থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেছেন : আমি আবু হুরায়রাকে ওযু করতে দেখেছি। তিনি খুব ভালােভাবে মুখমল ধুলেন, এরপর ডান হাত ধুলেন এবং বাহুর কিছু অংশ ধুলেন। পরে বাম হাত ও বাহুর কিছু অংশসহ ধুলেন। এরপর মাথা মাসহ্‌ করলেন। অতঃপর ডান পায়ের নলার কিছু অংশসহ ধুলেন, এরপর বাম পাও একইভাবে ধুলেন। অতঃপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে এভাবে ওযু করতে দেখেছি। তিনি আরাে বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ
পূর্ণাংগরূপে ওযু করার কারণে কিয়ামতের দিন তােমাদের কপাল, হাত ও পায়ের ওযুর স্থান শুভ্রতাপ্রাপ্ত হবে। সুতরাং তােমরা যারা সক্ষম তারা যেন নিজ নিজ মুখমল, হাত ও পায়ের জ্যোতি বাড়িয়ে নাও।



৪৮৯। [] সহিহ মুস্লিম শরিফ
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত।
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আমার উম্মাত ( কেয়ামতের দিন) আমার কাছে হাওযে কাওসারে উপস্থিত হবে। আর আমি লােকদেরকে তা থেকে এমনভাবে বিতাড়িত করবাে, যেভাবে কোনাে ব্যক্তি তার উটের পাল থেকে অন্যের উটকে বিতাড়িত করে থাকে। (একথা শুনে) লােকেরা জিজ্ঞেস করলাে ঃ হে আল্লাহর নবী, আপনি কি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? জবাবে তিনি বললেন, হাঁ। তােমাদের এমন এক চিহ্ন হবে যা অন্য কারাের হবে না। ওযুর প্রভাবে তােমাদের মুখমণ্ডল ও হাত-পায়ের দীপ্তি ও উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়বে। উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত অবস্থায় তােমরা আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর তােমাদের একদল লােককে জোর করে আমার থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তাই তারা আমার কাছে পৌছতে পারবে না। তখন আমি বলবাে, হে আমার প্রভু, এরাতাে আমার লােক। এর জবাবে একজন ফেরেশতা আমাকে বলবে, আপনি জানেন না, আপনার অবর্তমানে (ইনতিকালের পরে) তারা কি কি নতুন কাজ করেছে।


৫০০ ।    [] সহিহ বুখারি
মুসাদ্দাদ (র.)......
হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
একদা আমরা উমর (রা.) -এর। কাছে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ফি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা) -এর বক্তব্য তােমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছ ? হযরত হুযাইফা (রা.) বললেন, “যেমনি তিনি বলেছিলেন হুবহু তেমনিই আমি মনে রেখেছি।' উমর (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) -এর বাণী স্মরণ রাখার ব্যাপারে তুমি খুব দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছ। আমি বললাম, (রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছিলেন) মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তানসন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে যে ফিনায় পতিত হয়- সালাত, সিয়াম, সাদাকা, (ন্যায়ের) আদেশ ও (অন্যায়ের) নিষেধ তা দূরীভূত করে দেয় । হযরত উমর (রা.) বললেন, তা আমার উদ্দেশ্যে নয়। বরং আমি সেই ফিতনার কথা বলছি, যা সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় ভয়াল হবে। হুযাইফা (রা.) বললেন, হে আমীরুল মু'মিনীন! সে ব্যাপারে আপনার ভয়ের কোন কারণ নেই। কেননা, আপনার ও সে ফিনার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। হযরত উমর (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, সে দরজাটি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেওয়া হবে। হুযাইফা (র.) বললেন, ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রা.) বললেন, তাহলে তাে আর কোন দিন তা বন্ধ করা যাবে না। [হুযাইফা (রা.)-এর ছাত্র শাকীক (র.) বলেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হযরত উমর (রা.) কি সে দরজাটি সম্পর্কে জানতেন? হুযাইফা (রা.) বললেন, হাঁ, দিনের পূর্বে রাতের আগমন যেমন সুনিশ্চিত, তেমনি নিশ্চিতভাবে তিনি জানতেন। কেননা, আমি তার
কাছে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছি, যা মােটেও ভুল নয়। (দরজাটি কী) এ বিষয়ে হুযাইফা (রা.)| কে জিজ্ঞাসা করতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম। তাই, আমরা মাসরূক (র.)-কে বললাম এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, দরজাটি উমর (রা.) নিজেই।




No comments

Powered by Blogger.