বাংলা হাদিস

  


    [] সহিহ আবু দাউদ শরীফ
এর থেকে হাদিস সমূহ সংগৃহীত []



৭২৬। মুসাদ্দাদ- ওয়ায়েল ইবন হুজুর (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তােমাদেরকে | রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নামায পড়ার নিয়ম দেখাব। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলে নিজের উভয় হাত কান। পর্যন্ত উত্তোলন করেন। অতঃপর তিনি স্বীয় বাম হাত ডান হাত দিয়ে ধরেন এবং রুকূ করার সময় উভয় হাত ঐরূপ উত্তোলন করেন। অতঃপর তিনি তাঁর দুই হাত দুই হাঁটুর উপর রাখেন। রুকূ হতে মাথা উঠাবার সময় তিনি উভয় হাত তদ্রুপ উত্তোলন করেন। অতঃপর তিনি সিজদায়
স্বীয় মাথা দুই হাতের মধ্যবর্তী স্থানে রাখেন এবং বাম পা বিছিয়ে বসেন। অতঃপর তিনি তাঁর। | বাম হাত বাম রানের উপর এবং ডান হাত ডান রানের উপর বিচ্ছিন্নভাবে রাখেন। পরে তিনি স্বীয় ডান হাতের কনিষ্ঠ ও অনামিকা অংগুলিদ্বয় আবদ্ধ করে রাখেন এবং মধ্যমা ও বৃদ্ধাংগুলি বৃত্তাকার করেন এবং শাহাদাত অংগুলি (তর্জনী) দ্বারা ইশারা করেন- (নাসাঈ, ইবন মাজা)। আমি তাদেরকে এভাবে বলতে দেখেছি। আর বিশূর নিজের মধ্যমা ও বৃদ্ধাংগুলি দ্বারা বৃত্ত করেন এবং তর্জনী দ্বারা ইশারা করেন।




৭৩০। আহমাদ ইবন হাম্বল-- মুহাম্মাদ ইবন আমর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু হমায়েদ আস-সাইদী (রা)-কে দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে যাদের মধ্যে আবু কাতাদা (রা)ও ছিলেন- বলতে শুনেছিঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নামায সম্পর্কে আপনাদের চেয়ে সমধিক অবগত আছি। তাঁরা বলেন, তা কিরূপে? আল্লাহর শপথ! আপনি তাঁর
অনুসরণের ও সাহচর্যের দিক দিয়ে আমাদের চাইতে অধিক অগ্রগামী নন। তিনি বলেন, হাঁ। | অতঃপর তাঁরা বলেন, এখন আপনি আপনার বক্তব্য পেশ করুন। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম নামাযে দাড়াতেন তখন তিনি তাঁর হস্তদ্বয় কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে পূর্ণরূপে সােজা হয়ে দাঁড়াতেন। তিনি কিরাআত পাঠের পর তাকবীর বলে রুকুতে যাওয়ার সময় আল্লাহু আকবার বলে নিজের উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। রুকুতে | গিয়ে তিনি দুই হাতের তালু দ্বারা হাঁটুদ্বয় মজবুতভাবে ধরতেন। অতঃপর তিনি এমনভাবে রুকু
করতেন যে, তাঁর মাথা পিঠের সাথে সমান্তরাল থাকত। অতঃপর তিনি মাথা উঠিয়ে | ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলে স্বীয় উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে সােজা হয়ে দাঁড়াতেন। পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে তিনি সিজদায় গিয়ে উভয় বাহু স্বীয় পাঁজরের পাশ হতে দূরে সরিয়ে রাখতেন। অতঃপর সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতেন এবং সিজদার সময় পায়ের আংগুলগুলি নরম করে কিবলামুখী করে রাখতেন। তিনি আল্লাহ | আকবার বলে (দ্বিতীয়) সিজনা হতে উঠে বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর সােজা হয়ে বসতেন। অতঃপর তিনি সর্বশেষ রাকাতে স্বীয় বাম পা ডান দিকে বের করে দিয়ে বাম পাশের পাছার উপর ভর করে বসতেন। তখন তাঁরা সকলে বলেন, হাঁ আপনি ঠিক বলেছেন। রাসূলুল্লাহ | সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এইরূপেই নামায আদায় করতেন।




৭৩৩। আলী ইবনুল হুসায়ন ইবন ইবরাহীম-- আব্বাস (রহ) অথবা আইয়াশ ইবন সাহল (রহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি সাহাবীদের এক মজলিসে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে তাঁর পিতা এবং আবু হুরায়রা (রা), আবু হমায়েদ আস-সাইদী এবং আবু উসায়েদ (রা) ও উপস্থিত ছিলেন। এই সূত্রে উপরােক্ত হাদীছ কিছুটা হ্রাসবৃদ্ধি সহ বর্ণিত আছে। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি নবী) রুকূ হতে মাথা উঠিয়ে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ আল্লাহুম্মা রবানা লাকাল হাম্দ বলে স্বীয় হস্তদ্বয় উপরে উঠাতেন। অতঃপর তিনি আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতেন এবং হাতের তালু, হাঁটু ও পায়ের পাতার উপর ভর করে সিজদা করতেন। অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে তিনি পাছার উপর ভর করে বসতেন এবং অপর পাখানি সােজা করে রাখতেন। অতঃপর তাকবীর বলে সিজদা করতেন এবং পুনরায় তাকবীর বলে সিজদা হতে উঠে সােজা হয়ে দাঁড়াতেন। তিনি এ সময় আর বসতেন না। এইরূপে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি (স) দুই রাকাতের পর বসে যখন দাঁড়াতে ইচ্ছা করতেন, তখন আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়াতেন এবং এইভাবে নামাযের শেষের দুই রাকাত সম্পন্ন করতেন। এই বর্ণনায় শেষ বৈঠকেও বাম পাশের পাছার উপর বসার কথা উল্লেখ নাই।




৭৩৪। আহমাদ ইবন হাম্বল- আব্বাস ইবুন সাহল বলেন, আবৃ হুমায়েদ, আবু উসায়েদ, সাহল ইবন সাদ এবং মুহাম্মাদ ইবন মাসলামা (রা) কোন এক মজলিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নামায আদায়ের ধরন সম্পর্কে আলােচনা করেন। এ সময় আবু হুমায়েদ (রা) বলেন, আমি তােমাদের চাইতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নামায সম্পর্কে অধিকঅবহিত... অতঃপর কিছু অংশ এখানে বর্ণনা করা হল। রাবী বলেন, অতঃপর নবী করীম (স) রুকূ করার সময় স্বীয় হস্ত দ্বারা হাঁটু শক্তভাবে আটকিয়ে ধরতেন। অতঃপর তিনি স্বীয় হস্তদ্বয় তাঁর পার্শদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতেন। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি সিজদার সময় নাক ও কপাল মাটির সাথে মিলিয়ে রাখেন এবং হস্তদ্বয় পাশ হতে দূরে সরিয়ে রাখেন। অতঃপর তিনি এমনভাবে মাথা উঠাতেন যে, শরীরের সমস্ত সংযােগ স্থান স্ব-স্ব স্থানে স্থাপিত হত। অতঃপর বসে তিনি তাঁর বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পায়ের সম্মুখ ভাগ কিবলামূখী করে রাখতেন এবং ডান হাতের তালু ডান পায়ের উরুর উপর রাখতেন এবং বাম হাত বাম পায়ের উপর এবং তাশাহহুদ পাঠের সময় শাহাদাত আংগুল দ্বারা ইশারা। করতেন। ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেন, এই হাদীছ উবা (রহ) আবদুল্লাহ হতে এবং তিনি আব্বাস ইবন সাল হতে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তারা সেখানে বাম পার্শ্বের পাছার উপর বসার কথা উল্লেখ করেন নি।




৭৪১। নাসর ইবন আলী নাফে (রহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবন উমার (রা) যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন তিনি তাকবীর বলে দুই হাত উপরের দিকে উঠাতেন। অতঃপর তিনি রুকূ হতে মাথা তােলার সময় সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন। অতপর তিনি দুই রাকাত নামায শেষ
করার পর যখন দাঁড়াতেন তখন তিনি উভয় হাত উত্তোলন করতেন এবং এই বর্ণনা সুত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছেছেন (অর্থাৎ হাদীছটি মার)- (বুখারী)। ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেন, সত্য বর্ণনা এই যে, হাদীছটি ইবন উমার (রা)-র বক্তব্য, মারফ হাদীছনয়। ইমাম আবু দাউদ (রহ) আরাে বলেন, প্রথম হাদীছে দুই রাকাত নামায আদায়ের পর দাঁড়ানাের সময় হাত উঠানাে সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে- তা রাসূলুল্লাহ্ (স) হতে বর্ণিত নয়। ছাকাফী উবায়দুল্লাহ হতে বর্ণনা করেছেন এবং এই বর্ণনাসূত্র ইবন উমার (রা) পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং এখানে এরূপ উল্লেখ হয়েছে যে, যখন তিনি দুই রাকাত নামায সমাপ্তির পর দন্ডায়মান হতেন, তখন উভয় হাত বক্ষ পর্যন্ত উত্তোলন করতেন এবং এই রিওয়ায়াত সহীহ।। ইমাম আবু দাউদ (রহ) আরাে বলেন, লাইভ, মালিক, আইউব ও ইবন জুরায়েজ প্রমুখ রাবীগণ এই হাদীছের বর্ণনা সূত্র সাহাবী পর্যন্দ পৌছিয়েছেন। হাম্মাদ একাই এই হাদীছকে মারফু হাদীছ হিসাবেবর্ণনাকরেছেন। রাবী ইবন জুরায়েজ বলেন, আমি নাফেকে জিজ্ঞাসা করি যে, ইবন উমার (রা) তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় কি তাঁর হাত অন্য সময়ের চাইতে অধিক উত্তোলন করতেন? তিনি বলেন,
; বরং সব সময়ই তিনি একইরূপে হাত উঠাতেন। আমি বলি, আমাকে ইশারাপূর্বক দেখান। তিনি স্বীয় বক্ষদেশ বা তার চাইতে কিছু নীচে পর্যন্ত ইশারা করে দেখান।




৭৭৭। ইয়াকুব ইবন ইবরাহীম আল-হাসান হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সামুরা (রা) বলেন, নামাযের মধ্যে যে দুই স্থানে চুপ থাকতে হয়-তা আমি স্মরণ রেখেছি। প্রথমত ইমাম যখন তাকবীরে তাহরীমা বলে তখন হতে কিরাআত শুরু করা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়ত ইমাম সুরা ফাতিহা ও কিরাআত পাঠের পর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে। ইমরান ইবন হসায়েন (রা) এ কথা মেনে নিতে অস্বীকার করলে তাঁরা মদীনায় হযরত উবাই ইবন কাব (রা)-র নিকট এ সম্পর্কে জানার জন্য পত্র লেখেন। তিনি সামুরা (রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীছটি সমর্থন করেন- (ইবন মাজা)। ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেন, রাবী হুমায়েদ অনুরূপভাবে এই হাদীছ বর্ণনা করেছেন। ঐ হাদীছেও কিরাআত সমাপ্তির পর ক্ষণিক চুপ থাকা সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে।




৭৮৩। মুসাদ্দাদ"" আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায আরম্ভ করতেন এবং আলহামদু লিল্লাহে রবিল আলামীন বলে কিরাআত শুরু করতেন। তিনি রুকুর সময় স্বীয় মাথা উচু করেও রাখতেন না। এবং নীচু করেও রাখতেন না, বরং পিঠের সমান্তরাল করে রাখতেন। অতঃপর তিনি রুকু হতে সােজা হয়ে দাঁড়ানাের আগে সিজদায় যেতেন না এবং এক সিজদা করার পর সােজা হয়ে বসার পূর্বে দ্বিতীয় সিজদা করতেন না। তিনি প্রত্যেক দুই রাকাত নামায আদায়ের পর তাশাহহুদ পাঠ করতেন। অতঃপর তিনি যখন বসতেন, তখন বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখতেন। তিনি শয়তানের মত উপবেশন করা তথা উভয় গোঁড়ালীর উপর পাছা রেখে বসতে নিষেধ করতেন এবং চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় (অর্থাৎ দুই হাত মাটির সাথে বছিয়ে দিয়ে) সিজদা করতে নিষেধ করতেন। অতঃপর তিনি আস-সালামু আলাইকুম বলে নামায শেষ করতেন(মুসলিম, ইবন মাজা)।




৮২৪। আর-রবী ইবন সুলায়মান নাফে ইবন মাহমূদ হতে বর্ণিত। নাফে বলেন, একদা হযরত উবাদা ইবনুস সামিত (রা) বিলম্বে ফজরের নামাযের জামাআতে উপস্থিত হন। এমতাবস্থায় মুআযযিন আবু নুআয়েম (রহ) তাকবীর বলে লােকদের নিয়ে নামায আরম্ভ করেন। তখন আমি এবং উবাদা ইবনুস সামিত (রা) উপস্থিত হয়ে আবু নুআয়েমের পিছনে ইকতিদা
করি। এই সময় আবু নুআয়েম উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করছিলেন এবং উবাদা (রা) সূরা ফাতিহা | পাঠ করেন। নামাযান্তে আমি উবাদা (রা)-কে বলিঃ ইমাম আবু নুআয়েম যখন উচ্চস্বরে। কিরাআত পাঠ করছিলেন, তখন আমি আপনাকেও সুরা ফাতিহা পড়তে শুনি- এর হেতু কি? তিনি বলেনঃ হাঁ, আমি পাঠ করেছি। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কোন এক ওয়াক্তের নামাযে আমাদের ইমামতি করেন, যার মধ্যে উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করতে হয়। রাবী বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (স) কিরাআত পাঠের সময় আটকে যান। অতপর নামাযান্তে তিনি সমবেত মুসল্লীদের লক্ষ্য করে বলেনঃ আমি যখন উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করছিলাম, তখন | তােমরাও কি কিরাআত পাঠ করেছ? জবাবে আমাদের কেউ বলেন, হাঁ আমরাও কিরাআত পাঠ করেছি। তখন তিনি বলেন, এইরূপ আর কখনও করবে না। তিনি আরাে বলেন, কিরাআত | পাঠের সময় যখন আমি আটকে যাই তখন আমি এইরূপ চিন্তা করি যে, আমার কুরআন পাঠে  কিসে বা কে বাধার সৃষ্টি করছে? অতএব আমি নামাযের মধ্যে উচ্চস্বরে যখন কিরাআত পাঠ
করি, তখন তােমরা সূরা ফাতিহা ব্যতীত অন্য কিছু পাঠ করবে না। (নাসাঈ)।




৮২৫। আলী ইবন সাহল আর-রামলী- ইবন জাবের, সাঈদ ইবন আবদুল আযীয এবং আবদুল্লাহ ইবনুল আলা হতে বর্ণিত। তাঁরা হযরত মাল হতে, তিনি হযরত উবাদা (রা) হতে আর-রবী ইবন সুলায়মানের হাদীছের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তাঁরা বলেন, হযরত মাহুল মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাযে (ইমামের পিছনে) নীরবে প্রত্যেক রাকাতেই সূরা ফাতিহা পাঠকরতেন। মাকহুল (রহ) বলেনঃ ইমাম যে নামাযের মধ্যে উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করেন এবং থামেন তখন নিঃশব্দে সূরা ফাতিহা পাঠ কর। অপরপক্ষে ইমাম যদি বিরতিহীনভাবে কিরাআত পাঠ করেন, এমতাবস্থায় তুমি হয় ইমামের আগে, পরে বা সাথে সূরা ফাতিহা পাঠ কর এবং তা পাঠ করা কখনও ত্যাগ কর না।




৮২৬। আল-কানাবী- আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠের মাধ্যমে নামায আদায়ের পর জিজ্ঞাসা করলেনঃ তােমাদের কেউ এখন আমার সাথে (নামাযের মধ্যে) কিরাআত পাঠ করেছে কি? জবাবে এক ব্যক্তি বলেন, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ (স)! তখন নবী করীম (স) বলেনঃ এজন্যই আমার কুরআন পাঠের সময় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। রাবী বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম হতে এরূপ শােনার পর সাহাবায়ে | কিরাম উচ্চস্বরে কিরাআত পঠিত নামাযে তাঁর পিছনে কিরাআত পাঠ করা হতে বিরত থাকেন। | (তিরমিযী, নাসাঈ, ইবন মাজা)।। ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেনঃ ইবন উকায়মা এই হাদীছটি মামার, ইউনুস, উসামা ইবন যায়েদ (রহ) ইমাম যুহরী হতে রাবী মালিকের হাদীছের অনুরূপ অর্থে বর্ণনা করেন।



৩১৩। মুহাম্মাদ ইবন আমর উমাইয়া বিনতে আবুস সাত (রহ) থেকে গিফার গােত্রের লায়লা নামীয় এক মহিলার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সফরের সময় আমাকে তাঁর উটের পিছনের দিকে বসান। রাবী বলেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সারা রাত সফরের পর সাবাহ নামক স্থানে তাঁর উট বিশ্রামের জন্য বসান এবং এ সময় আমি আসন হতে অবতরণ করি এবং আসনের উপর আমার রক্ত দেখি। এটাই আমার জীবনের সর্ব প্রথম হায়েয। রাবী বলেন, তখন আমি লজ্জিত অবস্থায় উটের আড়ালে গিয়ে অবস্থান করি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম আমাকে লজ্জিত অবস্থায় এবং উটের পিঠের আসনে রক্ত দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, তােমার কি হয়েছে? সম্ভবতঃ তােমার হায়েয হয়েছে। আমি বলি- হ। তিনি আমাকে বলেন, তােমার লজ্জাস্থানে শক্তভাবে কাপড় বাঁধ এবং এক বদনা পানিতে কিছু পরিমাণ লবণ মিশ্রিত করে উটের পিঠের রক্ত-রঞ্জিত আসনটি ধুয়ে ফেল। অতঃপর তােমার আসনে সমাসীন হও। রাবী বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম খয়বর জয় করেন, তখন তিনি আমাদেরকে গণীমতের মালের কিছু অংশ দেন। রাবী (উমাইয়্যা) বলেন, উক্ত গিফার বংশীয় মহিলাটি যখনই হায়েযের রক্ত পরিষ্কার করতেন তখনই সেই পানির সংগে লবণ মিশ্রিত
বাধ এবং এক আমি বলি- হ জিজ্ঞাসা কর
রাবী বলে রক্ত-রঞ্জিত
করতেন এবং তিনি তার মৃত্যুকালে অন্যদেরকেও হায়েযের রক্ত পরিষ্কার করার সময় পানির সাথে লবণ মিশ্রিত করে ব্যবহারের উপদেশ দিয়ে যান।

No comments

Powered by Blogger.