বাংলা হাদিস

  [] সহিহ বুখারি- 

এর থেকে হাদিস সমূহ সংগৃহীত []

 





 ৩০৯৭।
উমর ইব্ন হাফস (র) .........
আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত,
সত্যবাদী-সত্যনিষ্ঠ হিসাবে স্বীকৃত রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তােমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান স্বীয় মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত জমা রাখা হয়। এরপর অনুরূপভাবে (চল্লিশ দিনে) তা আলাকারূপে পরিণত হয়। তারপর অনুরূপভাবে (চল্লিশ দিনে) তা গােশতের টুকরার রূপ লাভ করে। এরপর আল্লাহ তার কাছে চারটি বিষয়ের নির্দেশ নিয়ে একজন ফিরিশতা পাঠান। সে তার আমল, মৃত্যু, রিজিক এবং সে কি পাপী হবে না পুণ্যবান হবে, এসব লিখে দেন। তারপর তার মধ্যে রূহ ফুকে দেয়া হয় । (ভূমিষ্টের পর) এক ব্যক্তি একজন জাহান্নামীর আমলের ন্যায় আমল করতে থাকে এমনকি তার ও জাহান্নামের মধ্যে এক হাতে ব্যবধান থেকে যায়, এমন সময় তার ভাগ্যের লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জান্নাতবাসীদের আমলের ন্যায় আমল করে থাকে। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যক্তি (প্রথম হতেই) জান্নাতবাসীদের আমলের অনুরূপ আমল করতে থাকে। এমন কি শেষ পর্যন্ত তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাতের ব্যবধান থেকে যায় । এমন সময় তার ভাগ্যের লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জাহান্নামবাসীদের আমলের অনুরুপ আমল করতে থাকে এবং পরিণতিতে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে ।
৩১০১|
আবদান (র) .........
ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (সা) একদা জনসমাবেশে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহ্র যথােপযুক্ত প্রশংসা করলেন, তারপর দাজ্জালের উল্লেখ করে বললেন, আমি তােমাদেরকে তার থেকে সতর্ক করছি আর প্রত্যেক নবীই নিজ নিজ সম্প্রদায়কে এ দাজ্জাল থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন। নূহ (আ)-ও নিজ সম্প্রদায়কে দাজ্জাল থেকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আমি তােমাদেরকে তার সম্বন্ধে এমন একটা কথা বলছি, যা কোন নবী তার সম্প্রদায়কে বলেন নি। তা হলাে তােমরা জেনে , রেখ, নিশ্চয়ই দাজ্জাল কানা, আর আল্লাহ কানা নন।
৩১০৪।
ইসহাক ইবুন নাসর (র) ........
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমরা নবী (সা) -এর সাথে এক যিয়াফতে উপস্থিত ছিলাম। তার সামনে (রান্না করা) ছাগলের বাহু পেশ করা হল, এটা তার কাছে পছন্দীয় ছিল। তিনি সেখান থেকে এক টুকরা খেলেন এবং বললেন, আমি কিয়ামতের দিন সমগ্র মানব জাতির সরদার হব। তােমরা কি জান? আল্লাহ কিভাবে (কিয়ামতের দিন) একই সমতলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষকে একত্রিত করবেন ? যেন একজন দর্শক তাদের সবাইকে দেখতে পায় এবং একজন আহ্বানকারীর ডাক সবার কাছে পৌঁছায়। সূর্য তাদের অতি নিকটে এসে যাবে। তখন কোন কোন মানুষ বলবে, তােমরা কি লক্ষ্য করনি, তােমরা কি অবস্থায় আছ এবং কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছ। তােমরা কি এমন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করবে না, যিনি তােমাদের জন্য তােমাদের রবের নিকট সুপারিশ করবেন? তখন কিছু লােক বলবে, তোমাদের আদি পিতা আদম (আ) আছেন। (চল তার কাছে যাই)। তখন সকলে তার কাছে যাবে এবং বলবে, হে আদম! আপনি সমস্ত মানব জাতির পিতা। আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার পক্ষ থেকে রূহ আপনার মধ্যে ফুকেছেন। তিনি ফিরিশতাদেরকে (আপনার সম্মানের) নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সকলে আপনাকে সিজদাও করেছেন এবং তিনি আপনাকে জান্নাতে বসবাস করতে দিয়েছেন। আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট সুপারিশ করবেন না? আপনি দেখেন না, আমরা কি অবস্থায় আছি এবং কি কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি? তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়েছেন, এর পূর্বে এমন রাগান্বিত হননি আর পরেও এমন রাগান্বিত হবেন না। আর তিনি আমাকে বৃক্ষটি থেকে (ফল খেতে) নিষেধ করেছিলেন। তখন আমি ভুল করেছি। এখন আমি নিজের চিন্তায়ই ব্যস্ত। তােমরা আমি ব্যতীত অন্যের কাছে যাও। তােমরা নূহের কাছে চলে যাও। তখন তারা নূহ (আ) এর কাছে আসবে এবং বলবে, হে নূহ! পৃথিবীবাসীদের নিকট আপনিই প্রথম রাসূল এবং আল্লাহ আপনার নাম রেখেছেন কৃতজ্ঞ বান্দা। আপনি কি লক্ষ্য করছেন না, আমরা কি ভয়াবহ অবস্থায় পড়ে আছি? আপনি দেখছেন না আমরা কতইনা দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়ে আছি। আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করবেন না ? তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়ে আছেন, যা ইতিপূর্বে হন নাই এবং এমন রাগান্বিত পরেও হবেন না। এখন আমি নিজের চিন্তায়ই ব্যস্ত। তােমরা নবী (মুহাম্মদ (সা) ) -এর কাছে চলে যাও। তখন তারা আমার কাছে আসবে আর আমি আরশের নীচে সিজদায় পড়ে যাব। তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনার মাথা উঠান এবং সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে আর আপনি যা চান, আপনাকে তাই দেওয়া হবে। মুহাম্মদ ইবন উবাইদ (র) বলেন, হাদীসের সকল অংশ আমি মুখস্থ করতে পারি নি।
২৫১১।
সাঈদ ইব্‌ন আবু মারয়াম (র).........
সাহ্ল‌ ইব্ন‌ সা'দ (রা) থেকে বর্ণিত যে, আম্‌র ইব্ন‌ আউফ গােত্রের কিছু লােকের মধ্যে সামান্য বিবাদ ছিল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) তাঁর সাহাবীগণের একটি জামাআত নিয়ে তাদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য সেখানে গেলেন। এদিকে সালাতের সময় হয়ে গেল। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) মসজিদে নববীতে এসে পৌঁছেন নি। বিলাল (রা) সালাতের আযান দিলেন, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) তখনও এসে পেীছেন নি। পরে বিলাল (রা) আবু বকর (রা)এর কাছে এসে বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে সালাতেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি কি সালাতে লােকদের ইকামত করবেন?' তিনি বললেন, "'হ্যাঁ, তুমি যদি ইচ্ছা কর।" তারপর বিলাল (রা) সালাতের ইকামত বললেন, আর আবু বকর (রা) এগিয়ে গেলেন। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) এলেন এবং কাতারগুলাে অতিক্রম করে প্রথম কাতারে এসে দাঁড়ালেন। (তা দেখে) লােকেরা হাততালি দিতে শুরু করল এবং তা অধিক মাত্রায় দিতে লাগল। আবু বকর (রা) সালাত অবস্থায় কোন দিকে তাকাতেন না, কিন্তু (হাততালির কারণে) তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, নবী তার পেছনে দাঁড়িয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) তাকে হাতের ইশারায় আগের ন্যায় সালাত আদায় করে যেতে নির্দেশ দিলেন। আবু বকর (রা) তার দু'হাত উপরে তুলে আল্লাহর হামদ বর্ণনা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পেছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) আগে বেড়ে লােকদের ইমামত করলেন এবং সালাত সমাপ্ত করে লােকদের দিকে ফিরে বললেন, “হে লােক সকল! সালাত অবস্থায় তােমাদের কিছু ঘটলে তােমার হাততালি দিতে শুরু কর। অথচ হাততালি দেওয়া মহিলাদের কাজ। সালাত অবস্থায় কারাে কিছু ঘটলে সে যেন সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ বলে। কেননা, এটা শুনলে কেউ তার দিকে দৃষ্টিপাত না করে পারতাে না।' 'হে আবু বকর ! তােমাকে যখন ইশারা করলাম, 'তখন সালাত আদায় করাতে তােমার কিসের বাধা ছিল?' তিনি বললেন, 'আবু কুহাফার পুত্রের জন্য শােভা পায় না নবী (সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ) -এর সামনে ইমামত করা।










No comments

Powered by Blogger.